ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ এগিয়ে যাওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, সব সমালোচনার জবাব দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই নেমেছে তারা। তা অবশ্য হল না। ঘরের মাঠ অলিম্পিক্স স্টেডিয়ামে রিয়ালকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে লা লিগা প্রায় মুঠোয় বার্সেলোনার। বাকি তিনটি ম্যাচের একটিতে জিতলেই ট্রফি তাদের।
রিয়ালকে হারানোর পর ৩৫ ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট হল বার্সেলোনার। রিয়াল থাকল ৭৫ পয়েন্টেই। অর্থাৎ সাত পয়েন্টের পার্থক্য। আর একটি ম্যাচে জিতলেই আনুষ্ঠানিক ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে হান্সি ফ্লিকের দল।
রিয়ালের হারে সবচেয়ে দুঃখ সম্ভবত পাবেন কিলিয়ান এমবাপে। বিপক্ষের মাঠে হ্যাটট্রিক করেও দলকে জেতাতে পারলেন না। ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালেও তিনি হ্যাটট্রিক করেছিলেন। কিন্তু ট্রফি উঠেছিল লিয়োনেল মেসির হাতে। এ বারও হয়তো এমবাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পাবেন। কিন্তু লা লিগা পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
চলতি মরসুমে চারটি ‘এল ক্লাসিকো’র চারটিতেই জিতল বার্সেলোনা। এ রকম নজির খুব বেশি নেই স্পেনীয় ফুটবলার। লা লিগার দুই পর্বে যথাক্রমে ৪-০ এবং ৪-৩ জিতেছে রিয়াল। স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালে জিতেছে ৫-২ গোলে। কোপা দেল রে ফাইনালে জিতেছে ৩-২ গোলে।
এ দিন প্রথমার্ধেই ছ’টি গোল হয়েছে। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে যায় রিয়াল। বক্সের মধ্যে এমবাপেকে ফাউল করেন বার্সা গোলকিপার উজসিয়েচ শেজ়নি। পেনাল্টি থেকে এমবাপেই এগিয়ে দেন। ১৫ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ান তিনি। ভিনিসিয়াসের পাস থেকে গোল করেন। এর পরেই আচমকা খেলা থেকে হারিয়ে যায় রিয়াল।
১৯ মিনিটে কর্নার থেকে গোল করেন এরিক গার্সিয়া। ৩২ মিনিটে সমতা ফেরান লেমিন ইয়ামাল। দু’মিনিট পরে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন রাফিনহা। বিরতির আগে আবার একটি গোল করেন ব্রাজিলীয় ফুটবলার। রিয়ালের রক্ষণে নিয়মিত খেলা চার ফুটবলার নেই। তাঁদের ছাড়া রক্ষণ কতটা ভঙ্গুর তা বোঝা গিয়েছে বার্সেলোনার প্রতিটি গোলে। অরেলিয়ে চুয়ামেনির খেলা তো চোখে দেখা যায়নি। চতুর্থ গোলের সময় যে ভাবে সহজ ব্যাক পাস মিস্ করলেন লুকাস ভাজকুয়েজ, তা স্কুলছাত্রেরাও করবে না।
প্রথমার্ধে দু’টি দলই নিজেদের সেরা খেলাটা খেলে ফেলেছিল। সে কারণে দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় প্রত্যাশিত ঝাঁজ দেখা যায়নি। তবে দু’গোলে পিছিয়ে থাকা রিয়াল অনেক ভাল খেলেছে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে অনায়াসে ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারত তারা। এমবাপে, ভিনিসিয়াস, জোয়াও মুনোজ় সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। অন্য দিকে, বার্সেলোনার ফুটবলারেরাও সুযোগ নষ্ট করেছেন। এমবাপের মতোই হ্যাটট্রিক করতে পারতেন রাফিনহা। ইয়ামালের পাস পেয়েছিলেন রিয়ালের গোলের ঠিক সামনে। সেটাও বাইরে মারেন।
শেষ দিকে ফেদেরিকো ভালভার্দে এবং রিয়ালের দুই ফুটবলারকে কাটিয়ে দূরপাল্লার শটে অসাধারণ গোল করেছিলেন ফেরমিন লোপেজ়। সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের কাছে গিয়ে উচ্ছ্বাস শুরু করেন। তবে রেফারি ভার-এর সঙ্গে আলোচনা করে সেই গোল হ্যান্ডবলের কারণে বাতিল করে দেন।