রানে ফিরলেন লোকেশ রাহুল। গত কয়েকটি ম্যাচে বড় রান করতে পারেননি তিনি। সমস্যায় পড়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালসও। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে মরণ-বাঁচন ম্যাচে সেই রাহুলই টানলেন দিল্লিকে। বিরাট কোহলির স্মৃতি ফেরালেন রাহুল। ৬০ বলে শতরান করলেন তিনি। চলতি মরসুমে এটি রাহুলের প্রথম শতরান।
গুজরাতের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত খেললেন রাহুল। শেষ দিকে চার-ছক্কা ছাড়া কথা বলছিলেন না তিনি। ২০ ওভার শেষে ১১২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন রাহুল। তাঁর ব্যাটে গুজরাতের সামনে ২০০ রানের লক্ষ্য দিল দিল্লি।
এ বার ওপেনিং জুটি বার বার বদলেছে দিল্লি। ফাফ ডু’প্লেসি, অভিষেক পোড়েল, করুণ নায়ার থেকে জেক ফ্রেজ়ার ম্যাকগার্ক— তালিকা লম্বা। রাহুলও ওপেন করেছেন। তবে কয়েকটি ম্যাচে। যখন তাঁকে যেখানে দরকার সেখানে ব্যবহার করেছে দিল্লি। তবে গুজরাতের বিরুদ্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন অক্ষর পটেলরা। অভিষেক দলে থাকলেও ডু’প্লেসির সঙ্গে ওপেন করেন রাহুল। তিনি দেখিয়ে দিলেন, কেন তাঁকে এত বড় মানের ব্যাটার বলা হয়। ক্রিকেটের ধ্রুপদী ঘরানার ব্যাটার রাহুল। টেকনিক তাঁর প্রধান অস্ত্র। সেটাই দেখা গেল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে।
ডু’প্লেসি রান পাননি। অভিষেক শুরুতে সমস্যায় পড়েছিলেন। পরিস্থিতি দেখে হাত খুললেন রাহুল। প্রতি বলে চালাচ্ছিলেন না। বল দেখে খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগাচ্ছিলেন। রাহুল থাকায় পাওয়ার প্লে-তে সমস্যায় পড়েনি দিল্লি। রাহুলকে দেখে হাত খোলা শুরু করেন অভিষেকও। কিন্তু অন্য দিনের মতো ছন্দে ছিলেন না বাংলার ব্যাটার। ৩০ রান করেন তিনি। অধিনায়ক অক্ষর করেন ২৫ রান।
অপর প্রান্তে উইকেট পড়লেও রাহুলের খেলার ধরন বদলায়নি। তিনি জানতেন দিল্লির মাঠ আয়তনে ছোট। তাই তিনি মারার বল পাবেন। তাড়াহুড়ো করলেন না দিল্লির ব্যাটার। পুরনো মেজাজে দেখা গেল তাঁকে। ঠান্ডা মাথায় দলকে টেনে নিয়ে গেলেন। রাহুলের পরিকল্পনা ছিল শেষ পর্যন্ত খেলার। সেটাই করলেন। শেষ দিকে তাঁর রান তোলার গতি আরও বাড়ল।
১১২ রানের ইনিংসে ১৪টি চার ও চারটি ছক্কা মেরেছেন রাহুল। তবে নজর কাড়ল তাঁর দু’টি ছক্কা। শর্ট বলে পিছনের পায়ে দাঁড়িয়ে সোজা ছক্কা মারলেন রাহুল। স্মৃতি ফিরল কোহলির। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হ্যারিস রউফের বলে পিছনের পায়ে শর্ট বলে ছক্কা মেরেছিলেন কোহলি। মেলবোর্নের সেই ছবি ধরা পড়ল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। অবশ্য মেলবোর্নের তুলনায় দিল্লির মাঠ অনেকটাই ছোট। তা বলে রাহুলের কৃতিত্ব অস্বীকার করা যায় না।
আইপিএলের প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে গুজরাতের বিরুদ্ধে জিততেই হবে দিল্লিকে। তার জন্য দরকার ছিল বড় রান। কারণ, পরে শিশির পড়লে বোলারদের সমস্যা। রাহুল না থাকলে ১৭০ রান করতেও সমস্যায় পড়ত দিল্লি। সেই তারা গুজরাতের সামনে লক্ষ্য দিল ২০০ রানের। শেষ দিকে ট্রিস্টান স্টাবস ২১ রান করলেন বটে, তবে রবিবার রাতের অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম দেখল রাহুলের ‘কামাল, লা-জবাব’ ব্যাটিং।